লকডাউন মানছেনা ব্যবসায়ীরা

top Banner

মোহাম্মদ ইউসুফ

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত নির্দেশনা মিরসরাইতে মানা হচ্ছে অত্যন্ত ঢিমেতালে। সংক্রমন প্রতিরোধে উন্মুক্ত স্থানে হাট-বাজার সরানোর নির্দেশনা থাকলেও উপজেলায় আবুতোরাব বাজার ছাড়া অন্য বাজারগুলো এখনো সরানো হয়নি।
ভাইরাস প্রতিরোধে মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপসনালয়গুলোতেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। সারা দেশের ন্যায় মিরসরাইতেও বাড়ছে করোনা ভাইরতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত মিরসরাইতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০৭ এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩৩৮। হোম আইসুলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ৫৭ জন।

জানা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬টি বেড নিয়ে একটি করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে। যেখানে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গ্রহণ করা হচ্ছে করোনার নমুনা সংগ্রহ। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন ১৯ হাজার ১’শ ৯২জন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১৫ হাজার ৯’শ ৮৩, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৫২৪১ জন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন মজুদ আছে ৭৮১০ ডোজ। সরকারি হিসেবে মিরসরাইতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫জন। তবে গত কয়েক সপ্তাহে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা শহরের হাসপাতালে মিরসরাইয়ে ৫-৭ জন ব্যক্তি মারা গেছেন।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা মানা হাচ্ছে না মিরসরাইতে। উন্মুক্ত স্থানে সরেনি হাট-বাজারগুলো। ফলে বাড়তেছে করোনা ভাইরাস প্রশাসনের নজর এড়িয়ে চালু রয়েছে কাপড়ের দোকান, কসমেটিক্স সহ বিভিন্নপণ্যের দোকান। মহাসড়কে যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকলেও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে দেদারছে সিএনজি-অটোরিক্সা। যাত্রী পরিবহনে মানা হচ্ছে না কোন স্বাস্থ্যবিধি। মসজিদে নামাজের সময় মুসল্লীরা মানছেনা কোন স্বাস্থ্যবিধি। গ্রামের মসজিদগুলোতে তারাবীর নামাজের সময় আগত মুসল্লীরা ব্যবহার করেন না মাস্ক। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ বাড়লেও গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা মানতে নারাজ।

করোনা ভাইরাসের লাশ দাপন কাপনে গঠিত হওয়া শেষ বিদায়ের বন্ধুসংগঠনের উদ্যোক্ত ও মিরসরাই প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. নুরুল আলম বলেন, করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর মাদরাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও সমাজের বিভিন্নস্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে লাশের দাপন কাপন শুরু করি। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা ৯২ জনকে শেষ বিদায়ের বন্ধু দাপন কাপন করেছে। শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আর্থিক সহযোগিতায় আজকের এ অবস্থানে এসেছে। ভবিষ্যতে এর কর্মকান্ড আরো বৃহৎ পরিসরে করার জন্য তিনি সরকারি সহযোগিতা কামনা করেন।

ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুবল চাকমা বলেন, সরকারি বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে লকডাউনের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু রাখায় উপজেলার বিভিন্নহাট-বাজারে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উন্মুক্ত স্থানে হাট-বাজার সরানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাজার পরিচালনা কমিটিকে বাজার কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত শুধু আবুতোরাব বাজার সরানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, সরকারী নির্দেশনায় সারাদেশের ন্যায় মিরসরাইতেও করোনা ভাইরাসের টিকা প্রথম ডোজের পাশাপাশি দ্বিতীয় ডোজ প্রদান চলমান রয়েছে। ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য সবাইকে ভাকসিন গ্রহণ ছাড়াও মাস্ক ব্যবহার, ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয় ও শারিরিক দুরত্ব মেনে চলতে হবে। ভাইরাসের আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬টি বেড নিয়ে একটি আইসুলেশনসেন্টার চালুকরা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারো কোন উপসর্গথাকলে দ্রæত সময়ের মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য তিনি আহবান করেন।

আরো খবর