মিরসরাইয়ে কচু চাষ করে স্বচ্ছল অনেকে

top Banner

মিরসরাইয়ে চলতি মৌসুমে সাড়ে ৬ কোটি কচু বিক্রির আশা করছেন চাষিরা। ইতমধ্যে প্রায় বেশির ভাগ কচু বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। এখন জমি থেকে কচু উত্তোলন ও বাজারে বিক্রি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার ১৫০ একর জমিতে কচু আবাদ করা হয়েছে। উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কচু চাষ হয় মঘাদিয়া ইউনিয়নে। এখানকার জমিগুলো অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়া এখানে অন্য কোনো ফসল আবাদ সম্ভব হয় না। এ জন্য কৃষকেরা যুগ যুগ ধরে কচু আবাদ করছেন। এছাড়া উপজেলার সাহেরখালী, হাইতকান্দি, খৈয়াছরা, কাটাছরা ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন এলাকার নিচু জমিগুলোতে কচু আবাদ করা হয়।

কৃষক শামসুল আলম বলেন, আমি প্রায় ২৫ বছর ধরে কচুর আবাদ করে আসছি। এবারো ৬৫ শতক জমিতে চাষ করেছি। ইতোমধ্যে প্রায় ১ লাখ ৯৫ হাজার কচু, লতি ও পোঁপা বিক্রি করেছি। আরো ১৫দিন ধরে বিক্রি করতে পারবো।

মিরসরাই পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চাষী শহীদুল ইসলাম বলেন, আমি ৭০ শতক জমিতে কচু আবাদ করেছি। আমার জমিগুলো নিচু হওয়াতে বছরের বেশির ভাগ সময় পানি জমে থাকে, তাই অনেক বছর ধরে কচু আবাদ করে লাভবান হই। এবারো প্রায় দুই লাখ টাকা কচু বিক্রি করেছি।

শুধু শহীদুল নয়, এভাবে কচু চাষের সাথে জড়িত রয়েছেন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার অনেক কৃষক। কচু চাষ করে তাঁরা এখন অনেকটা স্বাবলম্বী।

আরেক চাষী ভোলা মিয়া বলেন, উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আমাদের গ্রামে বেশি কচু আবাদ করা হয়। বাপ-দাদার আমল থেকে কচু চাষ হয়ে আসছে। আমরা এখনো কচু আবাদ করে যাচ্ছি।

কথা হয় কচু জমি থেকে কচু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক শাহাদাত হোসেন ও কামরুলের সাথে। তারা বলেন, প্রতি বছর এই মৌসুমে আমরা কচু উত্তোলনের কাজ করি। ১৫০টি কচু জমি থেকে তুলে বিক্রির জন্য তৈরি করে দিলে ৮০০ টাকা বেতন পাই। ভোর ৫ টা থেকে কাজ শুরু করলে বেলা ১২টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। দিনের বাকি সময়ে অন্য কাজ করতে পারি।

মিরসরাই পৌরসভার কচুয়া এলাকার চাষি আব্দুল করিম বলেন, এবার আমি ৩০ শতক জায়গার উপর কচুর আবাদ করেছি। আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। কচুর শত আকার ভেদে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পযন্ত বিক্রি করে থাকি। এছাড়াও কচুর লতি মন হিসেবে দেড় হাজার টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৫০ একর জমিতে ৫শ কৃষক কচুর আবাদ করেছে। যাতে উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার ৩শত মেট্রিক টন। কচুর বর্তমান বাজার মূল্য কেজি প্রতি ২০ টাকা। এ হারে ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকার কচু বিক্রি হবে এখানে। ভালো ফলন হওয়ায় এ বছর বিগত বছরগুলোর রেকর্ড ছাড়িয়েছে। বাজার দামও ভালো পাচ্ছে।’ এছাড়া কচুর লতি এবং ফুল (স্থানীয় ভাষায় পোঁপা) এ হিসাব ধরা হয়নি বলে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান।

আরো খবর