চলমান রিপোর্ট
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম মো: আজিম হোসেন শাহাদাত (২০)। শুক্রবার (২৫ জুন) রাত সাড়ে আটটায় মিরসরাই পৌর সদরের হোপ মাও শিশু হাসপাপতালে এই খুনের ঘটনা ঘটে। হাসপাতালটির সত্তাধিকারী মিরসরাই পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যালেন মেয়র-১ শাখের ইসলাম রাজু। তিনি মিরসরাই পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। শনিবার বিকেলে ফেনী সদর হাসপাতাল মর্গে শাহাদাতের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর লাশ গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয়েছে।
নিহত আজিম হোসেন ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হাসানগনিপুর এলাকার আব্দুল বাতেনের ছেলে।
তার মা রাজু কমিশনারের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো আর পিতা আব্দুল বাতেন মিরসরাই সদরের একটি বেকারীতে কাজ করেন। তারা মিরসরাই পৌরসভার জিন্নাহর দিঘির পাড় এলাকার আমজাদ মেম্বার বাড়িতে নুর হোসেনের ঘরে ভাড়া থাকেন। আজিম উদ্দিন স্থানীয় একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
আজিম হোসেনের পিতা আব্দুল বাতেন জানান, শুক্রবার (২৫ জুন) বিকাল ৪টায় তার ছেলে আজিম হোসেন শাহদাত (২০) কে ভাড়া বাসা থেকে তুলে নিয়ে মিরসরাইস্থ হোপ মা ও শিশু হাসপাতালের ৬ষ্ট তলায় কমিশনার রাজুর অফিসে নিয়ে যায় রাজুর লোকজন। পরবর্তীতে আমি খবর পেয়ে রাত ৮টায় হোপ হাসপাতালে গিয়ে দেখি মোটা লাঠি দিয়ে কমিশনরা রাজু ও তার ক্যাডার বাহিনীর সদস্য ফরিদ, তারেক ও জাহিদ আমার ছেলেকে বেদড়ক মারধর করছেন। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। তারা আমাকেও আঘাত করতে করতে বলে এখানে কোন কথা বলা যাবে না, যাও চলে যাও। কমিশনার রাজু তার হাতে থাকা গাছের লাঠি দিয়ে আমার ছেলের মুখের উপর জোরে আঘাত করলে তার সামনের দুটি দাত পড়ে যায়। এসময় তার মুখ থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। বেদম লাঠির আঘাত সহ্য করতে না পেরে ঘটনা স্থলেই মারা যায় ছেলেটি। মারা যাওয়ার আগে টেবিলে থাকা একটি বোতল থেকে পানি পান করতে চাইলেও রাজু পানি পান করতে দেয়নি। তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে কি এমন দোষ করলো যে তাকে একেবারে মেরে ফেলতে হবে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
ঘটনার পর থেকেই মিরসরাই পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাখের ইসলাম রাজু পলাতক আছেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে বার বার যোগাযোগ করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, আজিম উদ্দিন খুনের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা রুজুর পক্রিয়া চলছে। আমরা হোপ মাও শিশু হাসপাতালে কমিশনার রাজুর অফিস পরিদর্শন করেছি। এসময় তার অফিস থেকে রক্তের দাগ লেগে থাকা রক্তাক্ত তোষক জব্দ করেছি। আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান চলমান রয়েছে। শনিবার বিকেলে ফেনী সদর হাসপাতালে আজিম উদ্দিনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।