মিরসরাইয়ে মসজিদ পরিচালনায় অনিয়ম ও মুসল্লীদের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

top Banner

মিরসরাইয়ে উজীর আলী কামলার জামে মসজিদের জমি ও অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধভাবে মসজিদ পরিচালনা এবং মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মুসল্লীদের নামে মামলা করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মুসল্লীরা। শুক্রবার (১ এপ্রিল) সকালে উপজেলার মিরসরাই সদর ইউনিয়নের পূর্ব কিছমত জাফরাবাদ গ্রামে মসজিদ প্রাঙ্গনে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শ্রেণী বয়সের শতাধিক মুসল্লী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক মো. কামরুল আহসান

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক মো. কামরুল আহসান বলেন, ১৯০৯ সালে উজীর আলী কামলার জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর মসজিদ পরিচালনার জন্য কোন কার্যকরী কমিটি ছিলো না। স্থানীয় মো. অজিউল হক, জাগির হোসেন ও রবিউল হোসেন মসজিদের নামে দানকৃত চাঁদা, জমির আয় ও সামাজিক চাঁদা সংগ্রহ করে ব্যক্তিগত আয়ত্বে রাখেন। এতোদিন মুসল্লী ও গ্রামবাসীকে কোন হিসাব দিত না। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর গ্রামবাসীর উদ্যোগে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরি কমিটি ও ৯ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পরও ওই তিন ব্যক্তি কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে নানা রকম তালবাহানা শুরু করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন দপ্তরে মুসল্লীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও মো. অজিউল হক বৈঠকে হাজির হয়নি। এদিকে মসজিদ কমিটির ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে মিরসরাই থানায় অভিযোগ করেন তিনি। থানায় উভয় পক্ষকে ডাকলে বিবাদীরা উপস্থিত হলেও বাদী উপস্থিত হয়নি। পরবর্তীতে গত ২৭ জানুয়ারি মিরসরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বরাবর মসজিদ কমিটি একটি লিখিত দরখাস্ত দেয়। এরপর গত ৮ মার্চ মো. অজিউল হক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আমাকে (কামরুল আহসান) বিবাদী করে আরো একটি অভিযোগ করেন। গত ২৮ মার্চ ইউএনও অফিসে শুনানির দিন ধার্য করা হলেও বিবাদী হাজির না হয়ে সময়ের দরখাস্ত করেন। মো. অজিউল হক বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে মুসল্লীদের বিরুদ্ধে দুটি মিছ মামলা (নং-১৫৬/২০২০ ও নং-১২২/২২) দায়ের করেন। যেখানে মুসল্লী কামরুল আহছান, নবী, একরামুল হক, জিয়াউল হক, এহসানুল করিম, রেজাউল করিম, তাজুল ইসলামকে বিবাদী করা হয়। মো. অজিউল হক মসজিদের মোতোয়াল্লী সেজে উজীর আলী কামলার জামে মসজিদের নাম পরিবর্তন করে ছিদ্দিক হাজী বাড়ী জামে মসজিদ নামে সাইনবোর্ড স্থাপন করেন। এতে করে মুসল্লী ও গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
কামরুল আহসান আরো বলেন, আমরা মসজিদের প্রায় ১০৬ শতক জমি, মসজিদের নামে দানকৃত আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং মিথ্যা-হয়রানী মামলা থেকে মুসল্লীদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য উক্ত সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ছলিম উদ্দিন বলেন, উজীর আলী কামলার জামে মসজিদের আয়-ব্যয় এবং মসজিদের মালিকানাধীন জমির আয়-ব্যয়ের হিসেবে নিয়ে মোতোয়াল্লী মো. অজিউল হকের সাথে মুসল্লীদের বিরোধ সমাধানের জন্য একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেয়নি। ইউনিয়ন পরিষদ, মিরসরাই থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়কে অবজ্ঞা করে মো. অজিউল হক স্থানীয় মুসল্লীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিয়েও স্থানীয় প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে।

আরো খবর