ফিরোজ মাহমুদ
বর্ষা এলেই দূর্গতির কমতি থাকেনা। গত ৫ বছরেরও বেশী সময় ধরে বর্ষায় বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি হয়ে পড়ে মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের মধ্য মায়ানী এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের চোকিদার বাড়ি। অনেকটা নুন আনতে পান্তা পূরায় এই পরিবারগুলো দেখার যেন কেউ-ই নেই। বর্ষা এলে দূর্ভোগের কমতি থাকেনা পরিবারগুলোর।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো জানান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দারস্থ হলেও পানি নিষ্কাশনের কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় অনেকটা অসহায়ত্ব হয়ে পড়েন তারা। যোগাযোগ একমাত্র সড়কটিও পানিতে তলিয়ে যায়। খানাখন্দে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়ক।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, টানা বর্ষায় ভেঙ্গে পড়েছে কয়েক পরিবারের ঘর। পানিতে থৈ থৈ করছে ঘরগুলো। রাতে বৃষ্টি হলেই খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করছে তারা। বৃষ্টি হলে চুলায় আগুন জ্বলেনা তাদের।
ভুক্তভোগী শানু মিয়া জানান, বর্ষা এলে আমাদের দূর্ভোগের শেষ থাকেনা। গত ৫ বছরেরও বেশী সময় ধরে বর্ষা এলে আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়ি। মেম্বার, চেয়ারম্যানের দারস্থ হয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। আমরা অসহায় পরিবার। রিক্সা চালিয়ে কোন রকম দিনপাতি করছি। স্থানীয় প্রসাশনের কাছে আমরা বসবাসযোগ্য পরিবেশ চাই। আমাদের কষ্টের শেষ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্যজন ভুক্তভোগী বলেন, এই বাড়ির পানি চলাচলের একটা পথ ছিলো কিন্তু জোরপূর্বক একটি পরিবার পানি চলাচলের ওই পথ বন্ধ করে দেয়ায় আমরা পানি বন্ধি হয়ে পড়ি। তাছাড়া ক্ষমতাসীন দলের গোলাম মাওলা নামের এক নেতা অপরিকল্পিত মাছ চাষে এই দূ্র্ভোগ আরো চরমে পৌঁছেছে। ওই পুকুরের পানি এই বাড়ির দিকে ছেড়ে দেয়ায় পানির তীব্রতা আরো বাড়তে থাকে। গেল বছর তার পুকুরের পানিতে তলিয়ে যায় পুরো বাড়ি। এলাকার মেম্বারকে জানালেও কোথাও কোন প্রতিকার না মেলায় চরম হতাশায় ভুগছেন হতদরিদ্র এই পরিবারগুলো।
স্থানীয় ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন মেম্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একাধিকবার ওই পরিবারের সাথে কথা বলেছি, কিন্তু তারা পানি চলাচলের জায়গা জোরপূর্বক বন্ধ করে রেখেছে। পানি নিষ্কাশনের বিকল্প পথের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার কিছু করার নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, এবিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। যেহেতু জেনেছি আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো হচ্ছে, শানু মিয়া, আলী আজম, ভুট্টো মিয়া, একরাম উদ্দিন, ইলিয়াস, মো. নবী, মো. শাহজাহান, নুরেরচ্ছাপা, কামরুল ইসলাম, সাইফুল্লাহ, আবসার উদ্দিন, দুলাল সহ প্রায় ২০টি পরিবার বর্তমান পানি বন্দি হয়ে আছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দাবী পানি নিষ্কাশনে অন্তত একটি পাইপ অথবা একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হলে এই দূর্ভোগ থেকে কিছুটা লাঘব হওয়া সম্ভব।