মিঠানালায় গরুর অস্বাভাবিক মৃত্যু!

ফিরোজ মাহমুদ

মিরসরাইয়ে একদিনে দু’টি গরুর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের সুফিয়া মাজার সংলগ্ন টেন্ডল বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মো. মোবারক হোসেন জানান, আমার স্ত্রীর স্বর্ণালংকার বিক্রি করে ৬৫ হাজার টাকায় একটি গাভী ক্রয় করি। পরবর্তীতে ওই গাভীটি একটি বাচ্চা দেয়। ওই বাচ্চার বয়স এখন প্রায় ১ বছর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গরুগুলো গোয়াল ঘরে বেঁধে খড়কুড় দিয়ে আসি। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে এসে দেখি বাচ্চাটি মাটিতে লুটিয়ে আছে। কাছে গিয়ে দেখি মুখে ফেনা বের হয়ে সেটি মারা গেছে। গাভীরও একই অবস্থা দেখে স্থানীয় একজন পশু ডাক্তারকে খবর দিই। গাভীরও মুখে ফেনা বের হচ্ছিল আর পেট ফুলে গিয়েছিলো। ডাক্তার এসে স্যালাইন, ইঞ্জেকশান দিলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। পরবর্তীতে এলকার অন্য একজনের মাধ্যমে মোবাইলে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি দুপুর ১২টায় আসবেন বলে জানান। দুপুর সাড়ে ১২টার সময় গাভীটিও মারা যায়।

পরবর্তীতে দেড়টার সময় ওই কর্মকর্তা এলেও গরু দুটো মারা গেছে শুনে বাড়িতে না এসে তিনি ফিরে যান। ডাক্তার সময় মতো এলে গাভীটি মারা যেতো না বলে দাবী করেন তিনি। গাভী এবং বাচ্চাটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বলে তিনি জানান।

মোবারক হোসেনের স্ত্রী বিবি তপুরা জানান, সংসারের সচ্ছলতার আশায় স্বর্ণালংকার বিক্রি করে ৬৫ হাজার টাকায় একটি গাভী ক্রয় করি। পরবর্তীতে সেটি একটি বাচ্চা দেয়। ওই বাচ্চার বয়স এখন প্রায় ১ বছর। ৫০ হাজার টাকায় কিনতে চাইলেও আমি বিক্রি করিনি বাচ্ছাটি। গাভীটিও ৭ মাসের গর্ভবতী ছিলো। আমার দুটি গরু একই দিন চলে গেল। আমি এখন কি করবো। আমার ছেলেকে মানুষ করবো কিভাবে? ৫ বছর বয়সের আদরের অবুঝ শিশুকে জড়িয়ে ধরে এমন বিলাপ করতে করতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার জানান, পূর্ব নির্ধারিত একটি মিটিং থাকায় আমি ওই সময় যেতে পারিনি। মিটিং শেষ করে দ্রুততার সাথে গিয়ে শুনেছি গাভীটিও মারা গেছে। পরে ওখান থেকে ফিরে আসছি।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা থাকলে ওই পরিবারকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

আরো খবর