মন্টু বাবুর বাড়িতে দেড়শ বছর জুড়ে বাসা বেঁধেছে বাদুড়ের দল

এম মাঈন উদ্দিন

বাড়ির একটি পুকুর পাড়ে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে শত শত বাদুড়। এছাড়া ঘুঘু, কাক, শালিক, ডাহুক, পানকৌড়ি, দোয়েল, মাছরাঙা, চড়ুই, কাঠঠোকরা, হটটিটি, লক্ষীপেঁচাসহ আরও নাম না জানা পাখির দেখা মেলে এখানে।

মিরসরাইয়ে মন্টু বাবুর বাড়ি যেন বাদুড় আর পাখিদের অভয়ারণ্য। প্রতিদিন সকাল হলেই বাদুড় আর পাখিদের কলকলানিতে বাড়ির মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। প্রায় দেড়শ বছর ধরে বাড়ির গাছগাছালিতে বাদুড় আর পাখিদের আবাস। এলাকার মানুষ বাড়িটির নাম দিয়েছে বাদুড় বাড়ি! উপজেলার ১১ নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম মাস্টারপাড়া। সেখানকার মন্টু বাবুর

বাড়িতে গাছে গাছে বাদুড় আর পাখিদের আবাস। বাড়ির মালিক স্থানীয় আবুতোরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নীহার কন্তি রায় জানান, বাদুড়দের জীবন প্রণালী বড়ই অদ্ভুত। তারা নিজেদের আহার সংগ্রহ ছাড়া কারো কোন ক্ষতি করে না। প্রায় দেড়শ বছর ধরে তারা বাড়ির বিভিন্ন গাছে বাস করছে।

নীহার কান্তি রায়ের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, তাঁর দাদা নন্দ কেরানীর সময় থেকে বাদুড়রা এখানে বাসা বেদেছে। পাশাপাশি অন্যান্য পাখিরা এখানে নিজেদের নিশ্চিন্ত আবাস গড়ে তুলেছে।

বাড়ির অন্যান্য লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই বাদুড়গুলো আহারের সন্ধানে নেমে পড়ে। ভোর হতে না হতেই তারা আবার নিজেদের নীড়ে ফিরে আসে। এতকাল ধরে কতযে প্রাকৃতিক দুর্যোগ গেছে কিন্তু তারা তাদের এখানকার আবাস ছেড়ে যায়নি।

এসময় নীহার কান্তি রায় আরো জানান, গ্রামের ছেলেপুলেরা মাঝে মাঝে বাদুড় আর পাখির বাসা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। আমরা বাড়ির সকলে তা করতে দিইনা। দুর্যোগের সময় বাদুড় অথবা পাখির বাসার ক্ষতি হলে আমরা নিজেদের উদ্যোগে তা মেরামত করে আবার আবাসযোগ্য করে দিই। বাড়ির শতবর্ষী গাছগুলোও কাউকে কাটতে দেয়া হয় না।

মিরসরাই উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার জানান, এ অঞ্চলে যেসব বাদুড়ের দেখা মেলে এগুলোর প্রচলিত নাম ভারতীয় উড়ন্ত বাদুড়। আর মন্টু বাবুর বাড়ির গাছগাছালি তাদের নিরাপদ আশ্রয় ভেবে দীর্ঘকাল তারা এখানে আবাস গড়ে তুলেছে।

আরো খবর