সমুদ্রের তীর ঘেঁসে জেগে ওঠা গহীন বিস্তীর্ণ চরে গড়ে উঠছে দেশের একমাত্র শিল্পনগরী। এক যুগ আগেও সাধারণ চোখে যেটা ছিলো অলীক স্বপ্ন, বর্তমানে তা এক জলজ্যান্ত বাস্তবতা। ৩০ হাজার একর জমির উপর গড়ে ওঠা এ শিল্পনগরটির নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর।
সারাদেশে অনেকগুলো শিল্পাঞ্চল থাকলেও শিল্পনগরী এটাই প্রথম। তিনটি আলাদা শিল্পাঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছে এ শিল্পনগরী। ফেনী জেলার সোনাগাজী, চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই ও সীতাকুন্ড উপজেলা জুড়ে এ শিল্পাঞ্চলের ব্যাপ্তি। শিল্পনগরীর আওতাধীন আলাদা তিনটি শিল্পাঞ্চল হলো সোনাগাজী অর্থনৈতিক অঞ্চল, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল ও সীতাকুন্ড অর্থনৈতিক অঞ্চল।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বারে গঠিত এ শিল্পনগরে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ, আধুনিক শিল্পায়ন ও অর্থনীতির যে মহাজংশন তার গল্পটা শুরু হয়েছিলো এক যুগ আগে। ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক ‘মহামায়া সেচ প্রকল্প’র উদ্বোধন করতে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেচ প্রকল্প উদ্বোধন শেষে মিরসরাইয়ের সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হেলিকপ্টারে ঘুরে মিরসরাইয়ের সমুদ্র উপকূলে জেগে ওঠা পরিত্যাক্ত অনাবাদি বিস্তীর্ণ চরটি দেখান। প্রধানমন্ত্রীকে অনাবাদি এ সুবিশাল ভূখন্ডে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার প্রস্তাব দেন উত্তর চট্টলার এ অবিসংবাদিত নেতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের এ প্রস্তাবে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং পরবর্তীতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে অনুমোদন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থছাড়সহ সার্বিক বিষয় নিজে তদারকি করেন।
দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় তার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব পায় মিরসরাই। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গভর্নিং বোর্ডের সভায় মিরসরাইয়ে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) ১ম বোর্ড সভায় অনুমোদন পায় মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল। শুরু হয় মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার যাবতীয় কার্যক্রম। ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী ভিডিও কনফারেন্সর মাধ্যমে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি মিরসরাই ইকোনোমিক জোনের অন্তর্গত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
বেজার ৪র্থ বোর্ড সভায় অনুমোদন পায় সোনাগাজী অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ৬ষ্ঠ বোর্ড সভায় অনুমোদন পায় সীতাকুন্ড অর্থনৈতিক অঞ্চল। শুরু হয় সীতাকুন্ড অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ফেনীর সোনাগাজী অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ। শুরুতে মিরসরাই, সোনাগাজী ও সীতাকুন্ডে আলাদা ৩টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হলেও পরবর্তীতে ৩টি জোনকে একত্র করে একটি শিল্পশহর/শিল্পনগরী করার পরিকল্পনা নেয় সরকার।
মিরসরাই, সোনাগাজী ও সীতাকুন্ডের তিনটি শিল্পাঞ্চল নিয়ে গঠিত শিল্পশহরটি বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুুর রহমানের নামে নামকরণ করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে বেজা। সে লক্ষ্যেই বেজা ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়ল ট্রাস্টে নামকরণের বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাঠান। সে বছরেরই ১০ আগস্ট নাম ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করে মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। নামকরণে কোন ধরনের আপত্তি না থাকায় দক্ষিণ এশিয়ার সববৃহৎ এ শিল্পনগরীর নামকরণ করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’। একই সময়ে এ শিল্পনগরে প্রতিষ্ঠিতব্য ১০০ একরের জলাধারটির নামকরণ করা হয় ‘শেখ হাসিনা সরেবর’।
২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল, সীতাকুন্ড অর্থনৈতিক অঞ্চল ও সোনাগাজী অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে গঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সাথে বিজিএমইএ গার্মেন্টস ভিলেজ ও শেখ হাসিনা সরণির নির্মাণ কাজও উদ্বোধন করেন তিনি।
৩০ হাজার একরের সুবিশাল এ শিল্পনগরীতে শুধু শিল্প থাকবে এমনটা কিন্তু নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ স্মার্ট শিল্পনগরীতে রূপান্তরিত করতে বেজা সমুদ্রবন্দর, রেল ও সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেরিন ড্রাইভ এবং আবাসিক এলাকা, পর্যটন পার্ক, হাসপাতাল, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সামাজিক অবকাঠামোর সমন্বয়ে একটি ‘স্মার্ট সিটি’ নির্মাণের জন্য বিশদ মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে সরকার।
মাস্টার প্ল্যানের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো যাতে অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হয় এবং জনসেবাগুলো ইন্টারেক্টিভ, স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল হয় তা নিশ্চিত করা। এ প্রকল্পের অধীনে বেজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর এর অভ্যন্তরে একটি ৩০ কিলোমিটার সড়কের পাশাপাশি অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো যেমন একটি সেন্ট্রাল এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, ডিস্রালিনেশন প্ল্যান্ট, সৌর জ্বালানি ব্যবস্থা, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট, বর্জ্য বাছাই সুবিধা এবং ছাদ ও ভাসমান সৌর বিদ্যুতের প্ল্যান্ট নির্মাণ করবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় ভূমি উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় সাইট আপগ্রেডিং, একটি বিনিয়োগকারী ক্লাব নির্মাণ এবং টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক, বিদ্যুৎ, গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্ক, পরিবেশগত ল্যাব এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাসহ ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) কেন্দ্র, একটি জরুরী সাড়া কেন্দ্র, একটি দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র, স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে।
এ প্রকল্পে কারখানার পাশাপাশি থাকছে আবাসন, বিনোদন ও অন্যান্য সেবা। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের জন্য আলাদা একটি বন্দর থাকবে, যেটি দিয়ে সহজেই চট্টগ্রাম ও অন্যান্য বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়া করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরণি নামে চার লেনের যে সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা তার দু লেনের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। উপকূল ঘেঁসে সুপারডাইকখ্যাত একটি উঁচু বাঁধ তৈরি করা হয়েছে, যা সাগরের পানি থেকে সুরক্ষা দেবে শিল্পকে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের অবকাঠামো উন্নয়নগত কাজও চলছে খুবই দ্রুতগতিতে। ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে ৫টি প্রতিষ্ঠান। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যেতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী বছরের শুরুতে উৎপাদনে যাবে অন্তত ৩টি প্রতিষ্ঠান। এশিয়ান পেইন্টস লিমিটেড ইতোমধ্যেই শুরু করেছে উৎপাদন। ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৪টি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: এশিয়ান পেইন্টস, নিপ্পন, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও সামুদা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।
উদ্বোধন হওয়া প্রতিষ্ঠান ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রিফেব্রিকেটেড স্ট্রাকচারাল স্টিল তৈরি করে, যা স্টিল ব্রিজ এবং স্টিলের উঁচু ভবন, কারখানা এবং পাওয়ার প্ল্যান্টে ব্যবহৃত হয়। নিপ্পন এবং ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড আমদানি করা ইস্পাত, পুরলিন, স্লিটিং শীট এবং কয়েল থেকে এমএস প্লেট উৎপাদন করে। এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড উৎপাদন করে পেইন্টস ও সহযোগী পণ্য ইমালশন। তারা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৩৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এশিয়ান পেইন্টস এর তথ্য মতে, তাদের কারখানায় ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু হয়েছে। পিএইচসি পাইলের প্রস্তুতকারক সামুদা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, ৮.২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে চার একর জমিতে তাদের কারখানা নির্মাণ করছে।
এছাড়াও উৎপাদনে যাওয়ার তাগিদে দ্রুত কাজ চলছে হেলথকেয়ার ফার্মা, বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ, এসকিউ ক্যাবল, জিংজিয়াং, মডার্ণ সিনটেক্স, বার্জার পেইন্টসসহ বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের।
প্রকল্প এলাকা ঘুরে সংযোগ সড়ক, প্রতিরক্ষা বাঁধ ও বনাঞ্চল তৈরির কাজ চলতে দেখা গেছে পুরোদমে। শিল্পাঞ্চলের ৩০ হাজার একর জমির শতকরা ২৫ ভাগ বনায়ন নীতির আওতায় চলছে গাছ লাগানোর কার্যক্রম। রাস্তার দু-ধারে পরিকল্পিত বনায়নের ছবি ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান হচ্ছে। এ শিল্পাঞ্চলে ঢুকতেই রয়েছে প্রশাসনিক ভবন, যার নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এর পরই রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভবন, যেখানে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা খোলা হয়েছে। প্রকল্পের জন্য একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে, যেটির কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) চেয়ারম্যান ইউসুফ হারুন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে ১৫২টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আসছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে জাপানের নিপ্পন, ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, যুক্তরাজ্যের বার্জার পেইন্টস ও সিঙ্গাপুরের উইলমার। আর দেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে পিএইচপি, বসুন্ধরা গ্রুপ ও টিকে গ্রুপ।
বার্জার বাংলাদেশ এখানে তাদের তৃতীয় এবং সবচেয়ে বড় কারখানা এ শিল্পনগরে স্থাপন করতে চায়। এ জন্য তারা বিনিয়োগ করবে ২০০-২৫০ কোটি টাকা, যে কারখানার কাজ ৫ বছরের মধ্যে সমাপ্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উত্তরা মোটরস লিমিটেড এই শিল্পনগরে গাড়ি অ্যাসেম্বলিং ও প্রস্তুতের জন্য ৫০ একর উন্নত জমির ইজারা চুক্তি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি এখানে ৩৩ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে সুজুকি ব্র্যান্ডের গাড়ি অ্যাসেম্বলিং ও প্রস্তুতের পরিকল্পনা করেছে।
দেশি-বিদেশি আরও যেসব প্রতিষ্ঠান এখানে বিনিয়োগ করে জমি বরাদ্দ পেয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে বেইজিং ঝেনুয়ান হেংহুই ইঞ্জিনিয়ারিং কনসাল্টিং কোম্পানি, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি, বিএসএ ফ্যাশনস লিমিটেড, হাংঝু ঝিনঝিয়াং গ্রুপ, ঝিন্দে ইলাস্টিক (বিডি), এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস, ইস্ট এশিয়ান কক্স, কমফিট কম্পোজিট নিট, ইওন মেটাল ইন্টারন্যাশনাল, ট্রেড ডিজাইন সল্যুশনস, ইয়নমেটাল লিমিটেড, ফন ইন্টারন্যাশনাল ও আরব বাংলাদেশ ফুডস লিমিটেড। এছাড়া বরাদ্দ পেয়েছে গ্যাস ওয়ান লিমিটেড, অনন্ত অ্যাপারেলস লিমিটেড, বিপি-পাওয়ারজেন লিমিটেড, এসিআই লিমিটেড, ইনট্রিগা অ্যাপারেলস লিমিটেড, হ্যামকো করপোরেশন লিমিটেড, যমুনা স্পেসটেক (জেভি) লিমিটেড, বিএসআরএম স্টিল মিলস লিমিটেড, চিটাগং পাওয়ারসহ অনেক প্রতিষ্ঠান।