আগামী বছরের মধ্যে উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা করছে সমুদা ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড, মডার্ন সিনটেক্স সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে (বিএসএমএসএন) দুটি কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। গত এপ্রিল থেকে উৎপাদন শুরু করেছে এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। এছাড়া জাপানের নিপ্পন স্টিল কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশের ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টের যৌথ বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠানেও গত মার্চে উৎপাদন শুরু হয়েছে। খবর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সহকারী প্রকৌশলী ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, বর্তমানে এশিয়ান পেইন্টস এবং ম্যাকডোনাল্ড স্টিল উৎপাদনে রয়েছে। এশিয়ান পেইন্টস রং এবং ম্যাকডোনাল্ড স্টিল উৎপাদন করছে স্টিল শিট। প্রতিষ্ঠান দুটির উৎপাদিত পণ্য দেশে বাজারজাত করা হচ্ছে।এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের মহা ব্যবস্থাপক বোধাদিত্য মুখার্জি টিবিএসকে বলেন, “আমরা এ বছরের এপ্রিলে কমার্শিয়াল সার্টিফিকেট পাই আর সে মাসেই উৎপাদন শুরু করি। কিন্তু মাঝে দুই ঈদ মিলে লম্বা ছুটি পড়ে যাওয়ায় আমরা এখনও প্রডাকশন লাইন বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছি।”
“আমাদের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ২৫০০০ টন, আমরা আশাবাদী যে শীঘ্রই পূর্ণ সক্ষমতা অর্জন করতে পারব।”
এই কর্মকর্তা আরও জানান, শিল্পনগরে তাদের কারখানাটির সব ধরনের ডেকোরেটিভ পেইন্টস এবং নির্মাণকাজে ব্যবহৃত রাসায়নিক পণ্য উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।
এদিকে জাপানের নিপ্পন স্টিল কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশের ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্ট যৌথ উদ্যোগে ১০ একর জমিতে ১১৪ কোটি টাকা বিনিয়োগে স্টিল কারখানা স্থাপন করে। গত ২৫ জানুয়ারী তারা কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে।
ম্যাকডোনান্ড স্টিলের প্রজেক্ট ম্যানেজার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২৩ মার্চ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে ২০ টন স্টিলের প্রথম চালান সরবরাহ করে ম্যাকডোনান্ড স্টিল। এরপর থেকে উৎপাদন অব্যাহত আছে। এই কারখানায় এমএস প্লেট তৈরী হচ্ছে।এছাড়াও ২০২৩ সালের মধ্যে উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা করছে সমুদা ফুডস, মডার্ন সিনটেক্স সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
গত মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধনের কথা জানিয়েছিলো বেজা।
বিএসএমএসএন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুক জানান, এই শিল্প নগরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এখতিয়ারে আছে।
বেজার তথ্য মতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের ৩০ হাজার একর জমির মধ্যে প্রায় ৬ হাজার একর জমি শিল্পকারখানা গড়ে তোলার উপযোগী করা হচ্ছে। অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে এই ৬ হাজার একর জায়গাজুড়ে রাস্তা, ব্রিজ, বিদ্যুৎ, গ্যাস সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে ৫০০ একর জায়গায় গড়ে উঠছে গার্মেন্টস ভিলেজ। ১ হাজার ১৫০ একর জমিতে গড়ে উঠছে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল; এছাড়াও ৫০০ একর বসুন্ধরা গ্রুপকে এবং ৫০০ একর এসবিজি ইকোনোমিক জোন প্রতিষ্ঠার জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেখানে চলেছে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ।
এছাড়া ৪০ একর জমিতে হেলথ কেয়ার, ১০০ একর জমিতে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ, ৪০ একর জমিতে এসকিউ ক্যাবল, ১০ একর জমিতে চীনের জিং জিয়ান, ২০ একর জমিতে মডার্ন সিনটেক্স এবং ১০০ একর জমিতে নিপ্পন ও ম্যাকডোনাল্ড সহ কয়েকটি কারখানার কাজ চলছে।