চলমান ডেস্ক
ভারতের প্রসাধন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে জমি লিজ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। রোববার (৬ জুন) বেজা কার্যালয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
বেজার পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আহসান এবং ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ গোপাল জমি লিজ চুক্তিতে সই করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে (মিরসরাই, ফেনী ও সীতাকুণ্ড অর্থনৈতিক অঞ্চল) ম্যারিকো বাংলাদেশ তাদের তৃতীয় কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে। এ কারখানায় মূলত প্রসাধন-সামগ্রী এবং পিইটি বোতল প্রস্তুত হবে। এতে এখানে প্রায় ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রায় ৫০০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
অনুষ্ঠানে ম্যারিকো বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ গোপাল জানান, বর্তমানে ম্যারিকোর ৯৯ শতাংশ পোর্টফলিও বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত করা হয়। ১০টি ক্যাটাগরির ৩৬টি ব্র্যান্ড রয়েছে ম্যারিকোর এবং দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে তারা পণ্য রফতানি করে।
তিনি আরও জানান, উৎপাদন পরিধি বাড়াতে তারা ২২০ কোটি টাকার অধিক বিনিয়োগের লক্ষ্য স্থির করেছেন এবং স্থানীয়ভাবে পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের মাধ্যমে পোর্টফোলিও আরও মজবুত করতে বদ্ধপরিকর। বেজায় বিনিয়োগকারী সেবার দ্রুততা এবং দক্ষতা নিয়ে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
বেজা বলছে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয়ের প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলা এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর।
বেজা আরও জানায়, ইতোমধ্যে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ এখানে নিশ্চিত হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে- জাপানের নিপ্পন, ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, যুক্তরাজ্যের বার্জার পেইন্টস, সিঙ্গাপুরের উইলমারসহ আরও অনেকে এবং দেশি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- পিএইচপি, বসুন্ধরা গ্রুপ, টি কে গ্রুপ ছাড়াও আরও বিভিন্ন বিনিয়োগকারী। এই শিল্পনগরে ইতোমধ্যে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বেজার সুসমন্বয়ের ফলে নির্মিত হয়েছে শেখ হাসিনা সরণি, দেশের সর্বপ্রথম সুপারডাইক, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গ্যাস সংযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ।
তারা আরও জানায়, এই শিল্পনগরে বর্তমানে ১৩টি শিল্প নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে এবং আরও ১৫টি প্রতিষ্ঠান শিল্প নির্মাণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। জুলাই মাস নাগাদ কমপক্ষে দুটি শিল্প কারখানা উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ শিল্পনগরের মাধ্যমে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কোভিড-১৯ মহামারির সময়েও এ শিল্পনগরের জন্য প্রায় পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।