দরিদ্রতার কারণে খুব বেশী পড়াশোনা করতে পারেননি। দশম শ্রেণিতে উঠার পর ইতি টানতে হয় শিক্ষা জীবনের। পরিবারের হাল ধরতে বিক্রি শুরু করেন হালিম। বাজারের ফুটপাতে হালিম বিক্রি করে এখন স্বাবলম্বী। এখন তার ঢাকাইয়া স্বাদের হালিম খেতে ইফতারের পর থেকে নানা বয়সী মানুষজন ভীড় করে।
উপজেলার মিঠাছরা বাজারের ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে হালিম বিক্রি করেই তিনি। অনন্য স্বাদ আর বৈশিষ্ট্যের জন্য সাবউদ্দিনের হালিমের বেশ কদর রয়েছে। এই হালিম বিক্রি করেই প্রায় ৭ বছর ধরে সংসার চালিয়ে যাচ্ছে। সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে সীমিত আয়ের মানুষ লোকজনও এখানে ভিড় জমান হালিম খেতে। এমন অনেকেই আছেন, কাজ শেষে তার হালিমের স্বাদ না নিয়ে বাড়ি ফেরেন না। বিকেলের পর থেকেই সাবউদ্দিনের এই হালিমের ভ্রাম্যমাণ দোকান ঘিরে ভোজন রসিকদের ভিড় বাড়তে থাকে। রাত ১০টা পর্যন্ত চলে হালিম বিক্রি। প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার হালিম বিক্রি করে থাকেন তিনি।
সাবউদ্দিনের ঢাকাইয়া স্বাদের এই হালিম তৈরির মূল উপাদান হলো বিভিন্ন স্বাদের মসলা, বিভিন্ন রকমের ডাল, গম ও মাংস। প্রতিদিন সকাল হতে না হতেই প্রস্তুতি আর তোড়জোড় পড়ে যায় হালিম তৈরির। বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয় গরুর মাথার মাংস। চুলা জ্বালিয়ে তাতে বিশাল পাতিলে চাপানো হয় কয়েক রকমের ডাল আর গম। এর মধ্যে অন্য পাতিলে তেল দিয়ে আদা, রসুন, পেঁয়াজ, জয়ফল, গরম মসলাসহ বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে কষানো হয়। এর পর অর্ধেক মসলা ডাল আর গমের সঙ্গে মিশিয়ে অবশিষ্ট অংশ মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে ঘণ্টাখানেক রান্না করা হয়। সবশেষে উভয় পাতিলের উপাদানগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয় মজাদার হালিম। আর হালিমের স্বাদ বাড়াতে এর ওপর দেওয়া হয় সালাদ, টক ও ভাজা পেঁয়াজ।
বন্ধুরা মিলে সাবউদ্দিনের দোকানে হালিম খেতে এসেছিলেন রাহাত, বাহার ও নাহিদ। তারা জানান, তারা চার-পাঁচ বছর ধরে এখানে হালিম খান। এখানকার গরুর হালিম সবচেয়ে সুস্বাদু। মসলাগুলো অন্যান্য জায়গার চেয়ে বেশ ভালোমানের।
হালিম বিক্রিতা সাহাব উদ্দিন জানান, স্বাদ আর বৈশিষ্ট্যের কারণে তার হালিম জনপ্রিয় হয়েছে। সমাজের বিশিষ্টজনরা এই ফুটপাতেই হালিম খেতে আসেন। অনেকে আবার মাটি বা প্লাস্টিকের পাত্রে পরিবারের সদস্যদের জন্য পার্সেল নিয়ে যান। হালিমের পাশাপাশি ফুচকা, চটপটি ও রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের ইফতার বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।