প্রাণী সম্পদ দপ্তরের অবহেলায় মারা গেল ছাগল

ফিরোজ মাহমুদ

মো. আবু নছর। খেলাধুলায় বেশ মনোযোগী সে। স্বপ্ন ফুটবল রেফারি হওয়ার। যুক্তও হয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা এথ্যালেট্রিক্স টিম ও সদস্য চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল রেফারি এসোসিয়েশনের সাথে। কিন্তু গেল এক বছরের বেশী সময় ধরে যখন বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে স্থবির গোটা বিশ্ব! ঠিক তখনি তিনি দেখেন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন।

ক্রয় করেছেন দেশী বিদেশি ১৫টি ছাগল। ‘নছর এগ্রো ফার্ম’ নামের খামারে ছাগলের পাশাপাশি করেছেন হাঁস মুরগির খামার। ইতোমধ্যে প্রথম দাপে কিছু মুরগি বিক্রিও করেছেন তিনি। পূর্ণ মনোযোগে শুরু করেন খামারে ছাগল লালন পালনে কাজ।

কিন্তু গত দুই সপ্তাহের বেশী সময় ধরে জীবনঘাতী পিপিআর ভাইরাসে প্রায় সব কটি ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়ে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে যোগাযোগ করলে পিপিআর ভ্যাকসিনে নেই বলে জানালে খালি হাতে ফিরে আসতে হয়। যার ফলে ‘যমুনা পারি’ জাতের দুটি ছাগল ৫জুলাই মারা যায়। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩৫হাজার টাকা।

তরুণ উদ্যোক্তা আবু নছর বলেন, উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে আমি একাধিকবার পিপিআর ভ্যাকসিনের জন্য যোগাযোগ করি। কিন্তু তাঁরা দিবো দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপন করে। গত সপ্তাহে আমি যোগাযোগ করলে আমাকে ফোন নম্বর নিয়ে ভ্যাকসিন আসবে বলে আমাকে ফিরিয়ে দেন। সর্বশেষ আমি প্রাণী সম্পদ অফিসে কর্মরত চিকিৎসক ওবায়দুল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি শহরে এখন আসতে পারবেন না বলে ফোন রেখে দেন। ভ্যাকসিনের অভাবে আমার দুটি ছাগল মারা গেল। অন্য ছাগলগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

এবিষয়ে চিকিৎসক ওবায়দুল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। তিনি বলেন, আমি শহরে হয়তো ছুটিতে ছিলাম তাই আসতে পারিনি।

এবিষয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার বলেন,
পিপিআর হচ্ছে ছাগলের একটি জীবনঘাতী রোগ। এ রোগ হলে অসুস্থ প্রাণীর জ্বর, মুখে ঘা, পাতলা পায়খানা, শ্বাসকষ্ট দেখা যায়। অনেক সময় অসুস্থ প্রাণীটি মারাও যেতে পারে। তবে এধরনের সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। তাছাড়া লকডাউনের কারনে পিপিআর ভ্যাকসিন বন্ধ। আমাদের স্টকে নেই। আমাদের অফিসে আসলে আমরা পরামর্শ দিতে পারি। কিন্তু অফিসে না এসে অভিযোগ করলে কিভাবে তার সমাধান দেব। সে অফিসে এসে বিস্তারিত জানালে প্রয়োজনে তার খামারে গিয়ে সেবা দেব।

আবু নছর উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়নের খোরমাওয়া গ্রামের মো. আইয়ুব আলীর পুত্র। সে প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

আরো খবর