পাহাড় থেকে উজাড় হচ্ছে সামাজিক বনায়নের গাছ

top Banner

নিজস্ব প্রতিবেদক:
মিরসরাইয়ের পাহাড় থেকে বনবিভাগের গাছ উজাড় করে নিয়ে যাচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। চুক্তিভূক্ত উপকারভোগীসহ কতিপয় ব্যক্তি সরকারী গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। সংরক্ষিত পাহাড়ি বনের উপকারভোগীরা গাছ কেটে বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


জানা গেছে, উপজেলার ওয়াহেদপুর গ্রামের অভিযুক্ত চুক্তিভুক্ত উপকারভোগীরা হলো, মোহাম্মদ মুন্না (২৬), নজরুল ইসলাম ভূইয়া বাবলু (৩৩), মো. মানিক (৪৫), মো. হাকিম আলি (৩৫)। এছাড়া একই ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার বাওয়াছড়ার আশ-পাশ থেকে গাছ কেটে নিয়ে গেছে এলাকার কতিপয় সন্ত্রাসী।
অভিযোগের ভিত্তিতে বায়ৈয়াঢালা-বড়তাকিয়া বিট কর্মকর্তা চোরাই কাঠ উদ্ধার করলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। মালিকানাধীন বাগানের সেগুন গাছ চুরির অভিযোগে মুন্নাসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।


বারৈয়াঢালা রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বনবিভাগ ২০০৩ সালে স্থানীয়দের কাছে চুক্তির মাধ্যমে প্রতিজন উপকারভোগীকে ১ একর করে পাহাড়ী জায়গা বরাদ্ধ দেয়। সেখানে শাল গাছ, সেগুন গাছ, গামারী গাছ ও ইউক্লিপটাস সহ প্রায় ১ হাজার প্রজাতির গাছের চারা রোপন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী তারা পাহাড়ি অংশে সরকার কর্তৃক তৈরিকৃত বাগানের মূল্যবান গাছের পর্যবেক্ষন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। চুক্তির মেয়াদ শেষে সরকারি টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ বিক্রি করে লাভের অংশ নিয়ে যাবে তারা। সরকারী চুক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বনাঞ্চলের গাছ পাহারা না দিয়ে তারা নিজেরাই কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।


সরেজমিনে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বিটের অর্ন্তগত মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকায় দেখা যায়, শাল গাছ, সেগুন গাছ, গামারী গাছ ও ইউক্লিপটাস গাছ সহ মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে গেছে। শুধু গাছের নিচের অংশ পড়ে রয়েছে। সরকারী গাছ কেটে ক্ষান্ত হননি তারা, পাশাপাশি ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানের গাছও কেটে নিয়ে গেছে চোরের দল।
খবর পেয়ে মিরসরাই থানা পুলিশ ও বারৈয়াঢালা বন বিটের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে কাউকে আটক করতে পারেননি। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বারৈয়াঢালা বিট কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন ওই এলাকার নজরুল ইসলাম বাবলুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গামারী গাছ, সেগুন গাছ ও ইউক্লিপটাস গাছ সহ মোট ৪৮.৮৭ ঘনফুট চোরাই কাঠ উদ্ধার করে ।


এই বিষয়ে নজরুল ইসলাম বাবলু বলেন, যারা গাছের ব্যবসা করে সবাই চোরাই গাছ কিনে, আমি একা না। গাছ নেয়া যদি আমার অপরাধ হয় তাহলে আইন অনুযায়ী যা হবার তাই হবে, আমি সেটার জন্য প্রস্তুত। মুন্না ও মানিক আমার পরিচিত। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আমার কাছে কিছু গাছ রেখে যায় পরবর্তীতে বনবিভাগের লোকজন ওই গাছ নিয়ে গেছে।

মিরসরাই থানার উপ-পরিদর্শক আতাউর জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বারৈয়াঢালা রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আলতাফ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

আরো খবর