::সাফায়েত মেহেদী::
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই পৌর সদর অংশ যেন মৃত্যু ফাঁদ। মহাসড়কের পূর্ব ও পশ্চিম উভয় পার্শে মিলিত হয়েছে চাঁদপুর-গোভনিয়া সড়ক। সড়ক দুটির সংযোগস্থলে যত্রতত্র লেগুনা, অটোরিকশা ও সিএনজি এলোমেলো ভাবে যাত্রী উঠা নামা করানোর ফলে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ঘটছে দুর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানি।
সর্বশেষ গত (০৫ ফেব্রুয়ারি) এখানে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় আলমগীর হোসেন (৪০) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহীর নিহত হন। দুর্ঘটনায় কারণ হিসেবে জানা যায়, সংযোগ সড়কে লেগুনা, অটোরিকশা, এলোমেলো ভাবে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা নামা করানোর ফলে মোটরসাইকেল যোগে মহাসড়কে ওঠার সময় আসে পাশে কিছু দেখতে না পাওয়ায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়। এর আগেও বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে এখানে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা সদরের মিরসরাই কলেজ রোড় ও কোর্ট রোড়ে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ও শত শত যানবাহন চলাচল করে। কোর্ট রোড় উপজেলার পশ্চিম দিক হয়ে ৪ টি ইউনিয়নকে মিরসরাই সদর হয়ে মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত করেছে।
অপরদিকে কলেজ রোড় পার্শ্ববর্তী ফটিকছড়ি উপজেলাকে পাহাড়ি অঞ্চল হয়ে পূর্বদিক দিয়ে মিরসরাই উপজেলার সদর হয়ে মহাসড়কের সাথে যুক্ত হয়েছে। তবে সড়ক দুইটি একটি পূর্বদিক হয়ে অপরটি পশ্চিম পাশে হলেও মহাসড়কের একই অংশে মিলিত হওয়ায় এ দুইটি সংযোগ সড়কে লেগুনা, অটোরিকশা, অত্র তত্র এলোমেলো ভাবে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা নামা করানোর ফলে সৃষ্ট যানজট থেকে ঘটছে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা।
একাধিক লেগুনা চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহাসড়কের পাশে অবৈধ ভাবে ফুটপাত গড়ে উঠায় সিএনজি অটোরিক্সা গুলো এলোমেলো ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। যার কারণে যাত্রী উঠা নামার জায়গা থাকেনা। ফলে এক প্রকার বাধ্য হয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে তাদের যাত্রী উঠা করাতে হয়। ফুটপাত উচ্ছেদ ও সিএনজি অটোরিক্সা এলোমেলো ভাবে দাঁড়ানো নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দুর্ঘটনার ঝুকি কমতে পারে বলে তারা জানান।

মিরসরাই পৌরসভার দায়িতরত্ব লাইনম্যান দিদারুল আলম বলেন, ‘নিয়মিত দুর্ঘটনা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। কেউ কথা শুনতে চায় না। চালকদের এলোমেলো ভাবে গাড়ি রাখতে বাধা দিলে অনেকে গালমন্দ করে। অনেকে তেড়ে এসে গায়ে হাত পর্যন্ত তুলতে চায়। প্রশাসন এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নিলে এ সমস্যা সমাধান হবে।
এবিষয়ে জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ একেএম শরফুদ্দীন বলেন, এ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। মোবাইল টিম পরিচালনা করে অনতিবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরসরাই পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন বলেন, মহাসড়কের এ অংশটি উভয় পাশে সংযোগ সড়ক থাকায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যদি কোর্ট রোড় ও কলেজ রোড় থেকে উভয়দিকে ১৫ ফিট দুরত্বে মহাড়সকে স্পিডব্রেকার স্থাপন করা হয় তবে দ্রুতগামী গাড়িগুলোর গতি রোধ হবে। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে।
সড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে মেয়র জানান, বাজার কমিটির মিটিং এ বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে ।