মিরসরাইয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে অপরিকল্পীত ভাবে খাল কেটে নির্মাণাধীন সড়ক ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। অপরিকল্পীত ভাবে খাল কাটায় ‘জোরারগঞ্জ বাজার আরএনএস থেকে আবুরহাট’ সড়কের ৩টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় গত ৯ জুলাই সোনাগাজী পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছে এলজিইডি। তবে চিঠির জবাবে সড়ক ভাঙ্গনে পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়ি নয় বলে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ও কাটাছরা ইউনিয়নে অবস্থিত গৌবিনাথপুর খালটি সংস্কার করে সোনাগাজী পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে খালটি সংস্কার করা হয়। পানি নিষ্কাশনে মাটি কেটে খালের এক পাশে রাখা হয়। কিন্তু এলজিইডির দাবি অপরিকল্পীত ভাবে খাল কাটার ফলে খালের পাশে অবস্থিত জোরারগঞ্জ বাজার আরএনএস থেকে আবুরহাট সড়কের ৩টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সড়কের পাশ থেকে মাটি কেটে নেয়ায় সড়ক ভেঙ্গে খালে পড়ে যাচ্ছে। এতে করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহণ।
স্থানীয়রা জানান, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি। নিমার্ণ সামগ্রীর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদার কাজ ফেলে পালিয়ে গেছে। এতে করে বিপাকে পড়েছে ওই সড়কের চলাচল করা কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার বাসিন্দা। আর এখন নতুন করে যোগ হয়েছে সড়ক ভাঙ্গন। এভাবে ভাঙ্গতে থাকলে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জোরারগঞ্জ বাজার আরএনএস থেকে আবুরহাট সড়কের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে ভাঙ্গন রোধে দেয়া প্রাচীর খালে পড়ে গিয়েছে। ধসে পড়ছে সড়কের বিভিন্ন অংশ। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
স্থানীয় সিএনজি অটো রিক্সা চালক মেজবা আলম বলেন, খাল খননের ফলে সড়কের পাশ থেকে মাটি সরে গিয়ে সড়কটি ভেঙ্গে যাচ্ছে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মুহুরী প্রজেক্ট থেকে মাছ বোঝাই ট্রাক চলাচল করে। দ্রুত সড়কটি সংস্কার না করলে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জোরারগঞ্জ বাজার আরএনএস থেকে আবুরহাট সড়কটির দৈঘ্য ৫ কিলোমিটার। খাল খননের ফলে সড়কটির ৩টি স্থানের প্রায় ১৩৫ মিটার ভেঙ্গে গেছে। দুই এক স্থানে সড়ক রক্ষায় দেয়া প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ে গেছে খালে। বিষয়টি এলজিইডি অবগত হওয়ার পর গত ৯ জুলাই খাল খননের দায়িত্বে থাকা সোনাগাজী পানি উন্নয়ন বোডর্কে চিঠি দেয়া হয়েছে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড চিঠির জবাবে যা লিখেছে তা সন্তোষজনক নয় বলে দাবি মিরসরাই এলজিইডি অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ তৌহিদুল ইসলামের। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাদের চিঠির জবাবে যা লিখেছেন তা সন্তোষজনক নয়। মূলত সড়কের পাশ থেকে গভীর করে মাটি কেটে নেয়ায় সড়কটি ভেঙ্গে গেছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড তা স্বীকার করতে রাজি নয়।
এদিকে গত মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ভাঙ্গা সড়কটি পরিদর্শনে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল সালাম মোল্লাসহ সিনিয়র কয়েকজন প্রকৌশলি।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলি রনি সাহা বলেন, মঙ্গলবার সকালে আমাদের বিভাগীয় প্রকৌশলি মহোদয় ধসে যাওয়া সড়কটি পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
এবিষয়ে গৌবিনাথপুর খাল খননের দায়িত্বে থাকা সোনাগাজী পানি উন্নয়ন বোডের্র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলি আরিফুল রহমান ভূইয়া সড়ক ভাঙ্গনের সাথে খাল খনন দায়ি নয় দাবি করে বলেন, সড়ক নির্মাণের সময় খাল থেকে কিছুটা দূরে রাখতে হয়। কিন্তু এলজিইডি সেটা করেনি। পানি বোঝাই মাছের গাড়ি চলাচলের কারণে সড়কটি আগে থেকে ভাঙ্গা ছিল।