মনজুরুল হক
অন্য দশ জনের মত আমারও জীবন পরিবার নিয়ে থাকতে, সুখ দুঃখ নিয়ে ভাবতে হয় প্রতিদিন। নিতে হয় স্বজন প্রতিবেশীদের খবর। এর বাইরে গ্রাম উপজেলা ও দেশ নিয়ে কিছু করার জন্য কল্পনার ভেতর অধীর আগ্রহ নাড়া দেয়। তখন আমি ইত্তেফাকের মিরসরাই প্রতিনিধি এবং ‘চলমান মিরসাই’ এর সম্পাদক।
২০০৮ সালের আগষ্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার সকল প্রস্তুতি শেষ হয়। আমি তখন ঢাকায় এলাকার দুইজন বড় ভায়ের সাথে গেলাম দেখা করতে গেলাম। যাদের সাথে প্রায়শই চলেছি। যেহেতু চলে যাচ্ছি তাদের সাথে দেখা হওয়া মনে করলাম। ফকিরাপুল থেকে সিএনজি অটোরিকশাযোগে বাসাবো গেলাম। ফোন দিলাম। তিনি বললেন বাইরে অপেক্ষা করতে। পাঁয়চারি করতে লাগলাম। এক ঘন্টা পর তিনি বেরিয়ে এলেন। তার সাথে কথোপকথন করে হেটে হেটে কতদুর গেলাম। নিষেধ করলেন আমেরিকা যেতে। একটা বিক্সা ডেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন তিনি। অবশ্য আমি আমেরিকা আসার কয়েকমাস পরেই আবদার করেন তিনি দুটি আই ফোন! তখন আমি ব্যবহার করি স্যামসং ফোন।
দ্বিতীয় জনের সাথে দেখা করতে গেলাম। বিশ্বাসই করতে পারছিলেননা আমি চলে যাব। পাসফোর্ট দেখালাম। অবশেষে বিশ্বাস করলেন। বারণ করলেন আমেরিকা যেত। কারণ তিনি আমেরিকায় ছিলেন। আমেরিকায় পড়া লেখা করেছেন। চাকরির অপার দিলেন তার নাম করা কোম্পনীতে। আমি তখন বললাম। আমি আগে ঘুরে আসি। যদি ভাল না লাগে তাহলে একটা শর্ত মানলে চাকরি করবো। জানতে চাইলেন কি শর্ত? আমি আপনাকে স্যার বলতে পারবোনা। তিনি বললেন অফিসের নিয়ম অনুযায়ি স্যার বলতে হবে। তাকে বললাম আমি ঘুরে আসলেও অন্তত আপনার কোম্পনীতে চাকরি করছি না। ভাগ্যের খেলায় এখন তিনি আমার মতই বিদেশ করছেন! তার সাথে দেখা হয় কথা হয়। পুরানো স্মৃতিচারণ করি।
আমেরিকা আসার দুদিন আগে মিরসরাইয়ের কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলাম। সর্বশেষ আমি কথা বললাম। আমার কল্পনার কথা জানালাম। বললাম আমার আমেরিকা যাওয়া সেদিন সার্থক হবে যেদিন আমার দ্বারা একজন মানুষের উপকার হবে। ইতিমধ্যে সেই কথার প্রতিফলন ঘটেছে। বেশ কয়েকজন চাকরি করছেন আমার প্রতিষ্ঠানে। ভবিষ্যতে হয়তো আরো বেশ কয়েকজন যুক্ত হবেন। আরো একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার সংকল্প রয়েছে। সেখানে ১৫/২০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতে পারে। বিস্তারিত অন্য সময় জানাব।
আসা যাক মিরসরাইয়ের জনপ্রিয় ‘চলমান মিরসরাই’ পত্রিকার কথা। ২০০৫ সাথে এই পত্রিকার আত্মপ্রকাশ। পত্রিকাটি ১৮ বছরে পর্দাপণ করেছে। ভাবতে ভালই লাগছে।
আমেরিকায় আমি যখন বাইরে যাই। যখন একটি সুন্দর অফিসে গিয়ে বসি তখন আমি ভাবতে থাকি,চলমান মিরসরাই অফিসটি যদি এমন হতো। তাহলে আমার সাংবাদিক ভায়েরা আরামে বসতে পারতো। যখন সুপার মার্কেট ও শপিং মল গুলোতে আরাম দায়ক ঠান্ডা বাতাস বইতে দেখি তখন মনে হয় আমার দেশের প্রতিটি শপিং মলে একই রকম শীতল বাতাস বইতো তাহলে আমার দেশের মানুষ গুলো আরামে কেনাকাটা করতো।
সব সময় প্রতিটি মানুষের মননে ভাল চিন্তা কাজ করুক। এটাই আমার প্রত্যশা। ভাল কল্পনার প্রতিফলন ঘটুক এটাই আমার চাওয়া।
ভাল কিছু থেকে ভাল কিছুর আর্বিভাব হবে এটাই আসল সত্যে। ‘চলমান মিরসরাই’ এর ১৮ তম বর্ষে পর্দাপণ উপলক্ষে আগামী দিন গুলো সবার যেন ভাল কাটে এই কামনা। পাঠক, লেখক, সাংবাদিক, বিজ্ঞাপনদাতা সবাইকে আমার পক্ষ থেকে প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
লেখক, প্রধান সম্পাদক, ‘চলমান মিরসরাই’
চিপ রির্পোটার প্রথম আলো, নর্থ আমেরিকা
সাধারণ সম্পাদক, আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাব