উপজেলার সিংহভাগ প্রাথমিকে নেই শহীদ মিনার
যেনতেন ভাবেই পালিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

top Banner

মিরসরাই উপজেলার ১৯১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে স্থায়ী শহীদ মিনার আছে মাত্র ২০টি বিদ্যালয়ে। মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিংহভাগের নেই শহীদ মিনার। তাই যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়না একুশে ফেব্রুয়ারী। স্কুলগুলোতে থাকেনা একুশে ফেব্রুয়ারীর কোন আয়োজন। কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেনতেন ভাবে পালন করে দিনটি। স্কুল থাকলেও শহীদ মিনার না থাকায় দিনটি উদযাপনের উৎসাহ পাননা ছাত্র-শিক্ষকরা।


শহীদ মিনার বাঙালী জাতীর এক নির্ভেজাল আবেগের নাম। প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারী বাংলা মায়ের সন্তানরা অত্যান্ত শ্রদ্ধার সাথে শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে। পালন করে মহান একুশ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।


উপজেলার অধিকাংশ প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় এ দিনটি পালনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তবে কিছু কিছু বিদ্যালয় কাগজ, বাঁশ দিয়ে ঐদিনটির জন্য তৈরি করে অস্থায়ী শহিদ মিনার। শিক্ষার্থীরা তাতেই অর্পণ করে ফুল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয় গ্রাম্য সাধারণ ফুল। স্কুল থেকে দেয়া হয়না বাঁধানো পুষ্পস্তবক।

শত বছরেরও অধিক পুরোনো ৬৭ নং দুর্গাপুর এন. সি. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই স্থায়ী শহীদ মিনার। একুশ উদযাপন করে তারা দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে গিয়ে। ১৮৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ স্কুলে শহীদ মিনার নেই কেন জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জরিনা আক্তার বলেন, আমাদের জায়গা আছে শহীদ মিনার করার জন্য। কিন্তু সরকারী কোন বরাদ্ধ না আসায় এখনো এখানে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়নি।


১৬৪ নং হরিহরপুর রুহুল আমিন ভেন্ডার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গাজী নুরুল আহাদ জানান, তাদের স্কুলেও নেই স্থায়ী কোন শহীদ মিনার। তবে আমরা শীগ্রই শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য বরাদ্ধ পাবো।


১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গনকছরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুদ্দীন মীর শাহীন জানান, সরকারী কোন বরাদ্ধ না থাকায় তাদের স্কুলেও নেই কোন শহীদ মিনার।


খোরমাওয়ালা হাজী নুর আহম্মদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী হামিদা আক্তার বলে, আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় আমরা ফুল দিতে পারিনা।


দেশ স্বাধীন হওয়ার এতোদিন পরও স্কুলে শহীদ মিনার নির্মিত না হওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তাদের অনেকেই জানায়, মিরসরাইয়ের বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে না। এ কারণে শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারছে না।


প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রসঙ্গে কথা হয় উপজেলা শিক্ষা অফিসার হকের সাথে। তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারী কোন বরাদ্ধ নেই। তবে স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্কুলগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের তৎপরতা চলছে। সরকার যদি বরাদ্ধ দেয় আমরা প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ বাস্তবায়ন করবো।

আরো খবর