চলমান রিপোর্ট
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর ও বিভিন্ন কোম্পানীর নির্মাণাধীন কারখানা পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কর্মকান্ড সরেজমিনে পরিদর্শনের অংশ হিসেবে এই সফর করেন তিনি।
এসময় তাঁর সাথে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর নির্বাহী সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ ইরফান শরীফ, নির্বাহী সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) (অতিরিক্ত সচিব) আলী আহসান, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর উন্নয়ন প্রকল্প’ এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুক, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও অর্থ) (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ হাসান আরিফ, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, মিরসরাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এম আলাউদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান সহ বেজা’র ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এই প্রতিনিধিদল বড়তাকিয়া (আবুতোরাব) থেকে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল সংযোগ সড়কের উন্নয়ন কাজ, ১৫০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণকাজ, বৈদ্যুতিক গ্রিড সাব-স্টেশন, পানির সরবরাহ স্থাপনা, গ্যাস সরবরাহ স্থাপনা এবং বেজা’র প্রশাসনিক ভবনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন।
মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে দলটি জুজু জিনউয়ান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড, এশিয়ান পেইন্টস্ বাংলাদেশ লিমিটেড, ভিকার ইলেকট্রিকাল লিঃ ও টেকনো ইলেকট্রিকাল লিমিটেড, আরমান হক ডেনিমস্ লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস্ বাংলাদেশ লিমিটেড, হেলথ কেয়ার ফার্মা ও সামুদা ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড-এর চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তাঁরা।
বেজার নির্বাহী সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ ইরফান শরীফ বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ সরকারের অন্যান্য বিভাগের সাথে সমন্বয় করে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরকে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রস্তুত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ সব ধরণের ইউটিলিটি সেবা প্রদান নিশ্চিত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এই শিল্পনগরে প্রতিষ্ঠিত বেশ কিছু কারখানা চলতি বছরেই উৎপাদনে যাবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন মোহাম্মদ ইরফান শরীফ।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারাদেশে পরিকল্পিত শিল্পায়নের অংশ হিসেবে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে, যার মধ্যে অগ্রাধিকার পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং বঙ্গবন্ধু কন্যার উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি। সভায় শিল্পনগরের চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম বিষয়ে তাঁকে অবহিত করেন প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুক।
প্রসঙ্গত : চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুন্ড উপজেলা এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় বিস্তৃত প্রায় ৩০ হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। এ শিল্পনগরে মাধ্যমে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত হয়েছে। সরকারী বিভিন্ন সংস্থার সাথে বেজার সুসমন্বয়ের ফলে নির্মিত হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের সংযোগকারী ১০কি.মি. দীর্ঘ সড়কপথ ‘শেখ হাসিনা সরণি’, বঙ্গোপসাগরের উপকূল ঘিরে ১৬ কি.মি. দীর্ঘ প্রতিরক্ষাবাঁধ বা সুপারডাইক, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গ্যাস সংযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ। এছাড়াও ২১২ একর জমিতে ‘শেখ হাসিনা সরোবর’ নামে কৃত্রিম জলাধার নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী এই শিল্প নগরের বিভিন্ন শ্রেণীর আবাসিক এলাকায় কর্মীদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা ছাড়াও সর্বসাধারণের বসবাসের জন্য আবাসিক এলাকা নির্মাণ করা হবে। শিল্প নগরে বাণিজ্যিক এলাকা, নগর কেন্দ্র, বিজনেস হাব, মিশ্র বাণিজ্যিক-আবাসিক এলাকা, প্রশাসনিক/প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা থাকবে। পুনর্বাসন, বিনোদন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা, একটি সমুদ্র বন্দর ও সংশ্লিষ্ট লজিষ্টিক এলাকা, উন্মুক্ত এলাকা, ম্যানগ্রোভ, পার্ক, মাঠ ও জলাশয়ের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা রাখা হয়েছে। বিনোদনের জন্য থাকবে মাঠ, হোটেল, রিসোর্ট, গল্ফ কোর্স, ওয়াটার পার্ক, সিনেমা ইত্যাদি।