উত্তর গড়িয়াইশ গ্রামে চলছে শোকের মাতম
নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন স্বজনরা

top Banner

ঘড়ির কাটায় রাত তখন ৩টা। অন্যান্য রাতে এ সময়টাতে গ্রামের সবাই গভীর ঘুমে নিমগ্ন থাকলেও বুধবার রাতে মিরসরাইয়ের উত্তর গড়িয়াইশ গ্রামের কারো চোখে ঘুম নেই। অনেক দূর থেকেও কানে ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। বুধবার রাতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের রায়পুর এলাকায় বেপরোয়া গতির কাভার্ডভ্যান চাপায় ওই গ্রামের সামছুদ্দিন ড্রাইভারের দুই ছেলে সিএনজি অটোরিক্সা চালক মোঃ শেখ ফরিদ (২৬) ও মোঃ সুমন (২৬) নিহত হন। তাদের দেখতে গ্রামবাসী, আত্মীয় স্বজন ও সিএনজি অটোরিকশা চালকরা সারা রাত ওই বাড়িতে ভীড় করছেন। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে আকাশ বাতাস।
বুধবার রাত ৩টায় শেখ ফরিদ ও সুমনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের লাশ ঘিরে রেখেছেন পাড়াপ্রতিবেশি সহ বন্ধু বান্ধব। সন্তানদের হারিয়ে পাগল প্রায় তাদের বাবা, মা। ঘরের ভেতর থেকে স্ত্রীদের ঘুমরে কাঁদার আওয়াজ আসছে। ফরিদ ও সুমনের সন্তানদের বুকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কাঁদছেন পিতা মোঃ সামছুদ্দিন। তিন কক্ষ বিশিষ্ট টিন সেটের ঘরে স্ত্রী, তিন ছেলে ও তাদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন সামছুদ্দিন ড্রাইভার।
মোঃ শেখ ফরিদের তাসফিয়া (৫) ও শেখ রাহিন (২) এবং সুমনের নিশাত (৭) ও মারিয়া (৪) নামে ২টি করে সন্তান রয়েছে।
সন্তানদের হারিয়ে নাতি নাতনিদের ভবিষ্যতে নিয়ে উদিগ্ন হয়ে পড়ছেন বাবা সামছুদ্দিন। তিনি বলেন, আমি ও আমার দুই ছেলে ফরিদ এবং সুমন সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালায়। প্রতিদিন রাত দশটার মধ্যে ছেলেরা গাড়ী গ্যারেজে রেখে বাড়িতে চলে আসে। আজ ১১টার পরও তারা বাড়ি আসেনি। রাত সাড়ে ১১টার সময় খবর পায় কাভার্ডভ্যানের চাপায় আমার সোনামনিরা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। এখন তাদের পরিবার কে দেখবে। তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত কে দেখবে। এসব বলতে বলতে তিনি বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গতঃ বুধবার রাত সাড়ে ১০ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ের চট্টগ্রামমুখী অংশের রায়পুর এলাকায় বেপরোয়া গতির কাভার্ডভ্যানের চাপায় ৩জন সিএনজি অটোরিকশা চালক, ১ জন নাইটগার্ড ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এসময় পুলিশ কর্মকর্তা সহ ৫জন আহত হয়। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

আরো খবর