চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে প্রোজিরিয়া রোগে আক্রান্ত শিশু শাহাদাতের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এক শিল্পপতি তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। রোববার (১২ নভেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় তাকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) শিশু বিভাগের এন্ডোক্রাইনোলজি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন। এরআগে গত ৪ অক্টোরব ‘১০ বছরেই বৃদ্ধ শাহাদাত!-শিরোনামে জাগো নিউজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে শিশু শাহাদাতের বাড়িতে ছুটে যান ইউএনও মাহফুজা জেরিন।
রোববার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মাহফুজা জেরিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিশু শাহাদাতের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। শনিবার বাড়ি থেকে তারা বিএসএমএমইউর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। আজ সকালে হাসপাতালের শিশু বিভাগের এন্ডোক্রাইনোলজি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) থেকে চিকিৎসা শুরু হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘শাহাদাতের সংবাদ দেখে আমি তখন ওই বাড়িতে ছুটে যাই। এসময় তার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের বসবাসের জন্য একটি ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিই। উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর নির্মাণের কাজ চলছে।’
‘ঢাকার এক শিল্পপতি শিশু শাহাদাতের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে তিনি নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে চান না। মূলত উনি চিকিৎসার জন্য বাবা-মাসহ শাহাদাতকে ঢাকায় নিয়ে যান। তাদের থাকার জন্য হাসপাতালের পাশে একটি ভাড়া বাসা ঠিক করে দিয়েছেন’, যোগ করেন ইউএনও মাহফুজা জেরিন।
শিশু শাহাদাতের পরিবার জানায়, শাহাদাতকে একটি বাইসাইকেল কিনে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এছাড়া তার পুষ্টির জন্য সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার ফলমূলসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়।
শাহাদাতের বাবা মো. হানিফ ফোনে জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় রয়েছি। আজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়েছে। শাহাদাতের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া ওই মানুষটি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন। কিন্তু নিজের নাম-পরিচয় দেয়নি।’তিনি আরও বলেন, আমি সাংবাদিকের কাছে কৃতজ্ঞ। তাদের লেখালেখির কারণে আমার ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে।
জন্মের চার মাস পর থেকে প্রোজিরিয়া রোগে আক্রান্ত হয় শাহাদাত হোসেন। সে উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজগাঁও গ্রামের মো. হানিফ ও নাছিমা আক্তারের ছেলে। তিন সন্তানের মধ্যে সে সবার ছোট। শাহাদাত মির্জাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। এখন তার বয়স ১০ বছর। তবে বিশেষ এ রোগের কারণে তাকে দেখতে বয়স্ক লাগে।