মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা শিকার ২৩ শহীদের কবর এক জায়গায় স্থানান্তর

top Banner

সৈদালী গ্রামে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে গণহত্যার শিকার ২৩ শহীদের কবর এক জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সৈদালী নাগরিক ফোারামের আয়োজনে কবরগুলো স্থানান্তর করা হয়। কবর স্থানান্তর অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জসীম উদ্দিন। অনুষ্ঠানের মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহম্মদ নিজামীর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার কবির আহম্মদ, চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুুনু, মিরসরাই থানার ওসি কবির হোসেন, সৈদালী নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ প্রমুখ।

জানা গেছে, স্বাধীনতা যুদ্ধচলাকালীন ৭১ সালের ২০ এপ্রিলে মিরসরাই সদর থেকে সামান্য দক্ষিণে ফেনাপুনী মাজার ও হাজারী দিঘী এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর একটি বহরে মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ যুদ্ধে গর্জে উঠে। ওই প্রতিরোধ যুদ্ধে পাক বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তারা পিছু হটে বড়তাকিয়া বাজার এলাকায় অবস্থান নিয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে সৈদালী গ্রামের ব্যাপক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। গ্রামের প্রায় সব বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। তাদের হত্যার শিকার হয় গ্রামের ২৩ জন নিরীহ নারী-পুরুষ। পরবর্তী ওই সময় নিহতদের বিক্ষিপ্ত ভাবে কবর দেওয়া হয়। পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, মোখলেছুর রহমান, আবুল কালাম, আমির হোসেন, খোরশেদ আলম, মমকছুদ আহাম্মদ, নজির আহাম্মদ, সুলতান আহম্মদ, কবির উদ্দিন, শেখ আহাম্মদ, আব্দুল মালেক, জোবেদা খাতুন, তমিজ উদ্দিন, হাকিম বক্স, বেদন আলী, জায়দ আলী, সামছুল আলম ভূঁইয়া, নুরুল আলম ভূঁইয়া, ফকির আহম্মদ, রহিম বক্স, আব্দুর রশিদ, মফিজুর রহমান, হোসেন জামান ও মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিনহাজুর রহমান জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর গণহত্যার শিকার শহীদদের কবর এক জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এতে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে আগামী প্রজম্ম জানতে পারবে। কবরস্থানের যাওয়ার জন্য নির্মিত সড়কটিও শহীদ সরনী নামে নামকরণ করা হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, যে মানুষগুলো জীবনের বিনিময়ে আমরা মহান স্বাধীণতা পেয়েছি। তাদের কবরগুলো এতদিন অবহেলিত ছিল। তাদের কবরগুলো একস্থানে স্থানান্তর করায় আগামী প্রজম্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সর্ম্পকে অবগত হবে।

আরো খবর