আনোয়ারুল হক নিজামী
কৃষি সমৃদ্ধ উপজেলা মিরসরাই। এ উপজলায় প্রায় সব ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। এবার উপজেলায় রবিশস্যের চাষাবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। প্রথমবারের মতো মিরসরাইয়ে কৃষি জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু হয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলনের আশা করছেন প্রান্তিক কৃষকরা। এ অঞ্চলের মাটির গুণাগুণ, আবহাওয়া ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় এটির চাষাবাদ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে ও আগ্রহী করে তুলতে উপজেলার ২নং হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পুর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের জাহিদুল আজিজ নাহিদ।
সূর্যমুখী একটি তেল ফসল। এটি স্থানীয়ভাবে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবেও পরিচিত। ভোজ্য তেলের মধ্যে সূর্যমুখী শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো তেল। এটি শরীরের কোলোস্টেরল ঠিক রাখে। তাই সূর্যমুখীর চাষাবাদ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে তৈলবীজ খামারে বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে এবার নাহিদ ১৮ শতক জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের সমারহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসছে প্রচুর দর্শনার্থীরাও। অনেকেই আসছেন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি এটি চাষ করার পরামর্শও নিচ্ছেন।
এই ব্যাপারে জাহিদুল আজিজ নাহিদ বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যসুখী ফুল চাষে খরচ কম। এতে সার ওষুধ কম লাগে। তেমন পরিচর্যাও করতে হয় না। তা ছাড়া অন্যান্য তৈল বীজ যেমন সরিষার, তিল এর চেয়ে তেলও বেশি পাওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, পুষ্টি চাহিদা পূরণে সুর্যমূখী তেলের জন্য বিদেশ থেকে এর বীজ আমদানি করতে হয়। দেশে এর আবাদ করা গেলে বিদেশ থেকে এর আমদানী কমে যাবে। এটি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দু’বার সেচ দিতে হয় এ ফসলে। প্রতি শতক জমিতে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা খরচ হয়। আর এক শতক জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৯০০০ থেকে ১১ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, ‘বেশি লাভজনক ফসল সূর্যমুখী। প্রথমবার কৃষকেরা সূর্যমূখী চাষ করে লাভবান হবেন বলে আশা করছি। এবার আমরা সূর্যমুখী চাষের জন্য কৃষকদের সার ও বীজ প্রণোদনা দিয়েছি। আগামীতে আরো বেশি পরিমাণে সূর্যমুখীর চাষ হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’