মিরসরাইয়ে মহাসড়কের ডালপালা কাটার টেন্ডার নিয়ে গাছ কেটে সাবাড় করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে মস্তাননগর বাইপাস থেকে বারইয়ারহাট পর্যন্ত সড়ক ও জনপদ বিভাগের সড়কের দু’পাশের বিভিন্ন গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে। ঝূঁকিপূর্ণ গাছগুলোর ডালপালা এবং মরা গাছগুলো কাটার জন্য দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) বৃক্ষপালন উপ-বিভাগ।
চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দরপত্র আহবানের পর গাছ টাকার কাজ পায় ঠিকাদার নারায়নগঞ্জের মো. শহীদ নামের এক ব্যক্তি। দরপত্র বিজ্ঞপ্তির আওতায় থাকা এলাকা হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কের বারইয়ারহাট থেকে মস্তাননগর বাইপাস পর্যন্ত ৮ কিমি এবং জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়কের ৭ কিমি। এই সড়কগুলোর পাশে থাকা বিভিন্নপ্রকার গাছের ঝূঁকিপূর্ণ ডালপালা এবং মরা গাছগুলো কাটার নির্দেশনা রয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে কার্যাদেশ প্রদানের ২০ দিনের মধ্য উক্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। কার্যাদেশ ব্যতীত অন্যকোন গাছ কাটা যাবে না বলেও উল্লেখ রয়েছে। অন্যগাছ কাটা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারের লোকজন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছের ঢালপালা ও মরাগাছ কাটার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। ২০ দিনের সময় নির্ধারণ করা হলেও প্রায় ২ মাসের বেশি সময় ধরে কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে তারা সড়কের বেশ কয়েকটি স্থান থেকে কেটে নিয়েছে বড় আকারের কড়ই গাছ ও বজ্রপাত সহায়ক তাল গাছসহ জীবিত অনেক গাছ। এছাড়া ডালপালা কাটার নামে তারা ঝূঁকিপূর্ণের বাইরে থাকা অনেক গাছের ডালপালা কেটে নিয়ে যায়। বিশেষ করে পুরতান কড়ই গাছগুলোর মোটা ঢালপালাগুলো এমনভাবে কাটা হয়েছে ওই গাছগুলো বেঁচে থাকার অবস্থাও নেই। এভাবে ঢালপালা কাটায় পুরোনো গাছগুলো মারা যেতে পারে। ফলে অচিরেই সড়কটি বৃক্ষশুন্য হওয়ার আশংকা রয়েছে।
জানা গেছে, ডালপাল কাটার টেন্ডার দেওয়া হয়েছে ৯৮ হাজার টাকা। আয়কর ৭.৫% বাবদ ৭৩৫০, ভ্যাট ১০ % বাবদ ৯৮০০- সর্বমোট ১ লক্ষ ১৫ হাহার ১৫০ টাকা।
গাছ কাটায় নিয়োজিত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঠিকাদার শহীদের নিকটাত্মীয় মোহাম্মদ ইসলাম এই কাজগুলোর তদারকি করছেন। এই বিষয়ে ঠিকাদার শহীদের মুঠোফোনে ০১৯৩৭৫২৫১২৩ একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। তার প্রতিনিধি ইসলামের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে ঠিকাদার বলে দাবী করেন। এছাড়া তিনি ঢাকার কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিকের নিকটাত্মীয় পরিচয় দিয়ে ফোন কেটে দেন।
চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উপ-বিভাগীয় বৃক্ষপালনবিদ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েকটি গাছ কেটেছে বলে স্থানীয়দের মাধ্যম থেকে শুনেছি। গাছের ডালপালা কাটার বিষয়টি আমরা তদারকি করছি। টেন্ডারের শর্ত ভঙ্গ হলে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হবে।